Thursday, December 05, 2013

লাদেনের পথেই হাটছে বিএনপি


নাইন ইলেভেনে আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার পরে বিশ্বব্যাপী আলকায়েদা বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছিল আমেরিকা ও তার মিত্র শক্তি। সে সময়ে অনেকটা আত্মগোপনে চলে গিয়েছিল আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন। পাহাড়ের গভীর গুহার ভেতরে থেকে ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছিলেন আমেরিকাকে। আর এগুলো প্রচারিত হতো আল-জাজিরা টেলিভিশনে।

একই পথে হাটছেন দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। অবরোধ ডেকে আত্মগোপনে চলে গেছেন নেতারা। কমেন্ট নেয়ার জন্য কোন পর্যায়ের নেতাদের খুঁজে পাচ্ছেন না সাংবাদিকরা। এরই মধ্যে ইমেইলে বিবৃতি দিচ্ছেন, অজ্ঞাত স্থান থেকে টেলিফোনে কমেন্ট দিচ্ছেন। সর্বশেষ ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়ে অবরোধ কর্মসূচি বৃহস্পতিবার বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে নয়া মুখপাত্র সালাহ উদ্দিন আহমেদ। এর আগে তিনি বিবৃতিও দিয়েছেন ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে। শুধুমাত্র অনুপস্থিত আল জাজিরা টেলিভিশন। তবে তারও কোন অভাব অনুভুত হয়নি। কারণ দু’ডজনেরও বেশি টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে ওই বিবৃতি।

এমনই বার্তা ও বিবৃতির মাধ্যমেই চলছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির রাজনৈতিক কার্যক্রম। দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গ্রেফতার হওয়ায় অন্য কেন্দ্রীয় নেতারা আত্মগোপনে রয়েছেন। বর্তমানে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয় নেতাশূন্য। এখন শুধু মিডিয়ায় বার্তা ও বিবৃতি পাঠানোর মাধ্যমেই দলের অবস্থান জানান দিচ্ছেন বিএনপির বর্তমান যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রুহুল কবির রিজভী গ্রেফতারের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরের কোনো নেতার চেহারা টেলিভিশনে দেখা যায়নি। গণমাধ্যম কর্মীরাও নেতাদের খুঁজে পাচ্ছেন না। বেশির ভাগ নেতার  সেলফোনও বন্ধ। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও প্রকাশ্যে আসছেন না। তবে রোববার বিকেলেও এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের রাষ্ট্রশাসনের কোনো অধিকার নেই। তফসিল ঘোষণা করে সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটের পুনর্গঠিত সরকার সম্পূর্ণ বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে সরকার পরিচালনা করছে। আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের তফসিল দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করে গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিচ্ছে।

অন্যদিকে রোববার দুপুরে অজ্ঞাত স্থান থেকে কয়েকটি টেলিভিশনে পাঠানো এক ভিডিও ফুটেজে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও বর্তমান মুখপাত্র সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, চলমান সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানজনকভাবে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি। ভিডিও বার্তায় তিনি আরো বলেন, দমন-পীড়ন, হত্যা-নির্যাতন এবং মামলা-হামলা চলমান আন্দোলনকে আরো বেগবান করবে। এখনো সময় আছে, সরকারকে আহ্বান জানাব, গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের মুক্তি দিন। সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নিন।

প্রসঙ্গত, রুহুল কবির রিজভী গ্রেফতার হওয়ার পর সালাহউদ্দিন আহমেদকে দফতর ও দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব দেয়া হয়। শনিবার দুপুরের পর থেকে তাকে আর জনসম্মুখে পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও যাননি তিনি। এছাড়া অন্য কেন্দ্রীয় নেতাদেরও জনসম্মুখে দেখা যাচ্ছে না।

ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকাসহ জাতীয় নেতাদের নামে দায়ের হওয়া একের পর এক মামলার প্রতিবাদে রোববার বিকেলে ঢাকা মহানগর বিএনপি এক ই-মেইল বার্তায় বলা হয়, পতন আসন্ন জেনে জালিম সরকার বিএনপির ত্যাগী ও সংগ্রামী নেতাদের কণ্ঠ রোধ করার জন্য একের পর এক সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে। সরকার তার পেটোয়া বাহিনী দিয়ে সারা ঢাকা মহানগরীতে বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে তার দায়ভার বিএনপির ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।

No comments:

Post a Comment