Sunday, December 22, 2013

ক্যাটরিনা কাইফের স্কিন মেক-আপ আর্টিস্টের কাছে স্বপ্নের মতো

katrina kaif

ভারতে এখন শহর জুড়ে আমির খানের লাইফ সাইজ কাট-আউট। সেই কাট-আউটেই দেখা যাচ্ছে আমিরের খালি গায়ে বডি আর্ট-এর বাহার। আমিরের এই বডি আর্ট বানাতেই লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে এসেছিলেন এয়ারব্রাশ মেক-আপ আর্টিস্ট অ্যাডাম টেনেনবাওম। এমনিতে আমেরিকায় অ্যাডাম কাজ করেন ফ্যাশন শ্যুট আর লাইভ পারফরম্যান্সের জগতে। র‌্যাল্ফ লরেন, টম ফর্ড আর টিফানোভার মতো আন্তর্জাতিক ফ্যাশন লাইনের কাজ করেন। সিনেমায় কাজ, ‘ধুম থ্রি’তেই প্রথমবার৷ ভারতেও পা ফেলা সেই সূত্রেই৷

এয়ারব্রাশ মেক-আপটা আমিই করছি
আমি অনেক দিন ধরেই জিমন্যাস্টিক আর অ্যাক্রোবেটিকের সঙ্গে যুক্ত। আমার অনেক বন্ধুও রয়েছে এই জগতে। তাদের মধ্যেই একজনের সূত্রে আমি ‘ধুম থ্রি’-তে সুযোগ পাই৷ আসলে এই ছবিতে যিনি আমির খানকে অ্যাক্রোব্যাটিক শিখিয়েছেন তিনি আমার ঘনিষ্ঠ। আমার পোর্টপোলিও তিনিই আমিরকে দেখান। ওর মনে হয়েছিল বলিউডের জন্য আমি উপযুক্ত। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শিকাগোয় একটা ফিল্মের সেট-এ আমিরের সঙ্গে আমার দেখা হয়। বেশ কিছুক্ষণ আমির কথা বলেন আমার সঙ্গে৷ আমার কাজের ধরন, পদ্ধতি নিয়ে নানা প্রশ্ন করেন৷ তারপর ভারতে ফিরে আমায় জানান যে এই এয়ারব্রাশ মেক-আপটা আমিই করছি।

আমিরকে তৈরি করতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা লাগত
প্রায় দশ বছর ধরে আমি এয়ারব্রাশ মেক-আপ করছি৷ আমির চেয়েছিলেন পেইন্টিংটা এমন হবে যেন দেখেই মনে হয় ট্যাটু করা হয়েছে৷ আমির খুব খুঁতখুঁতে। এই তথ্যটা আমি জানতাম না৷ ভেবেছিলাম কয়েকটা ডিজাইন দেখালেই ওঁর পছন্দ হবে। কিন্তু তা হয়নি। পাঁচদিন ধরে বিভিন্নি ভ্যারিয়েশন, রং, মডেলের উপর পরীক্ষা করার পর ঠিক হয় শেষ পর্যন্ত কেমন হবে ব্যাপারটা। প্রতিদিন আমিরকে তৈরি করতে আমার চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগত। স্টান্ট শক্ত হলে বডি ডাবল ব্যবহার করা হত। তখন তো দু’জনকেই তৈরি করতে হতো আমায়। একমাস ধরে আমাকে এই কাজ করতে হয়েছে। তবে আমিরের ধৈর্য খুব বেশি। এটা ক্রিয়েটিভ কাজ প্রতিদিন একই সময়ে শেষ হবে এমন কথা তো বলা যায় না। আবার কন্টিনিউয়িটিরও ব্যাপার আছে৷ আমিরকে কখনও বিরক্ত হতে দেখিনি। সব সময় বলতেন যতটা সময় লাগে নিয়ে যেন কাজটা করি। আমির স্যার ইজ গ্রেট৷

কাজ না থাকলে সেটে ক্যাটরিনার সঙ্গে দাবা খেলতাম
ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গে আমার একটা দৃশ্যেই কাজ ছিল। কিন্ত্ত ওর মসৃণ ত্বকের কথা আমার চিরকাল মনে থাকবে। ওর স্কিন যেকোনো মেক-আপ আর্টিস্টের কাছে স্বপ্নের মতো। কোনো খুঁত নেই। নিজের মতো করে মেক-আপ দিয়ে তৈরি করে নেয়া যায়। একটা দৃশ্যে কাজ করলেও আমার সঙ্গে বেশ ভালোই আলাপ হয়ে গিয়েছিল ক্যাটের। সেটে সময় পেলে আমরা দাবা খেলতাম। আর শেষ অবধি জিততে না পারলে ক্যাট পুরো ছকটাই ঘেঁটে দিত। সত্যিই আমির আর ক্যাটরিনা দুজনের বন্ধুত্বই বেশ এনজয় করেছি।

প্রথম দিনের গুগলি
আমার প্রথম দিনের শ্যুটের অভিজ্ঞতা বেশ মজার। ভেবেছিলাম প্রথম দিন থেকেই আমির খানকে মেক-আপ করার সুযোগ পাবো। কিন্ত্ত কোথায় কী! পাঁচজন পুরুষ মডেলকে দেয়া হলো আমায়৷ আমার কাজ হলো বডি টাইপ অনুযায়ী প্রত্যেকের বডি পেইন্ট করা৷। একটা সেট হতো আর ফোটোগ্রাফার ছবি তুলে পাঠিয়ে দিতেন প্রযোজক আর পরিচালকদের অফিসে। সেখান থেকে পরবর্তী নির্দেশ আসতো কীভাবে ইম্প্রোভাইজ করতে পারি। নির্দেশ বলব না, বরং বলা উচিত ‘সাজেশন’। কারণ আমাকে বরাবরই ক্রিয়েটিভ ফ্রিডম দেয়া হয়েছে। সত্যি কথা বলতে বলিউডের ক্রিউ এত প্রফেশনাল হবে আমি ভাবিনি। কিন্ত্ত ভারতে কাজ করে দেখলাম ওখানকার ফিল্ম মেকিং টেকনিকটা খুবই উন্নত আর প্রফেশনাল।

ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো
আমি এখন লস অ্যাঞ্জেলেসে৷ ইচ্ছে ছিল ‘ধুম থ্রি’ রিলিজ করার সময় ভারতে থাকব। কিন্ত্ত সেটা সম্ভব হল না। তাই ঠিক করেছি এখানকার হলে রিলিজ করলেই ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো দেখব। সারা বিশ্ব ঘুরে ছবিটা শ্যুট করা হয়েছে। নানা ফিল্ডের ক্রিয়েটিভ মানুষরা এই ছবিতে কাজ করেছেন। তাই ছবিটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছি।
- See more at: http://www.fairnews24.com

No comments:

Post a Comment